• হট ভিডিও প্রতিদিন

    Advertisement

    Sunday, October 23, 2016

    নয়া সংস্কৃতি ‘যৌন সংগীত’। গানের কথা আর ভিডিও লজ্জা দেয়

    ডেস্ক : কথায় আছে, লোকসংগীতের মাধ্যমে নাকি লোকশিক্ষা হয়| গ্রাম বাংলার জীবনযন্ত্রণা, লোকাচার, সামাজিকতা— সবই ঠাঁই পায় লোকসংগীতে| কিন্তু ইদানীং আসানসোল, বাঁকুড়া এবং পুরুলিয়ার কিছু সংগীতশিল্পী লোকসংগীতকে বিকৃত করে বিশুদ্ধ যৌনতার আসর বসিয়েছেন বলে উঠছে অভিযোগ| দেহতত্বের আড়ালে সেইসব চটুল গান জুড়ে রয়েছে শুধুই যৌনসঙ্গম আর নারী-পুরুষের গোপনাঙ্গের কথা| সরাসরি গোপনাঙ্গের কথা বলার পরিবর্তে ব্যবহার করা হচ্ছে ফল-মূল আর সবজির প্রতীক| এতটাই স্থূল সেইসব গানের কথা, যার ইঙ্গিত বুঝতে অসুবিধা হয় না এখনকার প্রাইমারি স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদেরও| যেমন একটি গানে এক পুরুষ কণ্ঠ কোনও মহিলাকে উদ্দেশ করে বলছে, ‘তোমার কচি কচি লাউ দেখে আমার জিভে আসে জল গো।’ আবার কোনও গানের কথা এরকম- ‘আহা পাকা নারকেল— ভিতরে জলে ভরা, উপরে ছোবড়া শুধু ভিতর শাঁসে ভরা।’
    পশ্চিমবঙ্গ-বিহার সীমান্ত এলাকায় বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে নয়া এই ‘লোকসংগীত’| স্থানীয়রা এই গানের নাম দিয়েছেন ‘খোট্টা গানা’ বা ‘রং-এর গান’| গানের অ্যালবামের ডিভিডি ছড়িয়ে পড়েছে বাজার জুড়ে| শিল্পীদের প্রোগ্রামের বায়না ধরতে ব্যবহার করা হচ্ছে ইউটিউব ও সোশ্যাল মিডিয়াকে| খুব সচেতন ভাবেই ভিডিওগুলির শিরোনামে রাখা হচ্ছে ‘সেক্স’ কিংবা ‘হট-সং’-এর মতো শব্দ| ফলত গুগল-এ এইসব ‘কি ওয়ার্ড’ দিয়ে সার্চ করতেই ঝাঁকে ঝাঁকে বেরিয়ে পড়ছে ‘খোট্টা গানে’র অ্যালবাম|
    কিন্তু ভোজপুরি কিংবা নাগপুরি গানের সুরের আদলে তৈরি করা এই নয়া লোকসংগীতের আমদানিতে অশনি-সংকেত দেখছেন পুরুলিয়া-বাঁকুড়া-বীরভূমের সনাতন লোকসংগীত শিল্পীরা। বিশিষ্ট লোকসংগীত শিল্পী যশোদা সরকার জানান, দু’রকম অর্থবাহী এইসব গান তাঁদের সুস্থ শিল্পসত্ত্বায় আঘাত হানছে| তাঁদের অনুষ্ঠান চলাকালীন উটকো এইসব গানের আবদার নিয়ে আসছেন একশ্রেণির দর্শক-শ্রোতারা| লোকসংগীতকার সুবল সরকার এইসব ‘খোট্টা গান’কে গান না বলে ‘কমেডি’ বলে কটাক্ষ করেছেন| লোকসংগীত শিল্পীরা বলছেন, আজকাল জুয়ার আসরে বা মদ্যপদের ঠেক-এ প্রায়শই আয়োজন করা হয় অশ্লীল ‘ডান্স হাঙ্গামা’ বা ‘যাত্রাডান্স’| ব্লু-ফিল্মের আদলে নাচের মুদ্রায় আগে ব্যবহার হতো ভোজপুরি গান, আর এখন তার পরিবর্তে ব্যবহার হচ্ছে নয়া এই বাংলা গান| গানের নামে শুধুই যৌনতার চাষ বাংলার লোকসংগীতের ঐতিহ্যবাহী ধারাটিকে অপবিত্র করে তুলছে বলেই মনে করছেন লোকসংস্কৃতি বিশেষজ্ঞরা।